গনোরিয়া রোগ কি, লক্ষণ এবং প্রতিকার?

 গনোরিয়া (Gonorrhea)



গনোরিয়া


Neisseria Gonorrhoeae প্রজাতিভুক্ত ব্যাকটেরিয়ামের সংক্রমণে সৃষ্ট যৌনবাহিত রোগকে গনোরিয়া বলে । N.gonorrhoea নারীর জনন নালি (সারভিক্স, জরায়ু, ফেলােপিয়ান নালিসহ) এবং নারী ও পুরুষের ইউরেথ্রার মিউকাস ঝিল্লিতে সংক্রমণ ঘটায়। মুখ, গলা, চোখ ও পায়ুর মিউকাস ঝিল্লিও এ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত হয়। গর্ভকালীন জটিলতা ছাড়াও নারী পুরুষ উভয়েই বন্ধ্যা-বন্ধ্যে হয়ে যেতে পারে।


 সংক্রমণ প্রক্রিয়া (Mode of Transmission):

যৌন মিলনের সময় আক্রান্ত দেহের বহিযৌনাঙ্গ, মুখ ও পায়ু থেকে সংক্রমণ ঘটে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময়ও

আক্রান্ত মাতৃদেহ থেকে এ রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে। যে ব্যক্তি এক সময় গনোরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর

চিকিৎসায় সেরে উঠেছে এমন ব্যক্তি গনাোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে পুনর্মিলন ঘটালে সেও পুনঃসংক্রমিত হতে পারে।

গনােরিয়ায় আক্রান্ত অনেক ব্যক্তির দেহে তেমন স্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশ পায় না বলে এটি ব্যাপক বিস্তৃত যৌনবাহিত অসুথ

হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।



লক্ষণ (Symptoms):

👉 পুরুষে গনোরিয়ার লক্ষণ :

 আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনের ২-১৩ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায় ।

(i) পেনিসের মাথা প্রথমে লাল হয়ে ওঠে ও চুলকায়। পরবর্তীতে সেখান থেকে পুঁজ নির্গত হয়। (ii) জালাপােড়া হয়,

প্রস্রাবের তীব্রতা, ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। (iii) কুচকির লসিকাগ্রন্থি ফুলে যায় ও ব্যথা হয়। (iv) সেমিনাল ভেসিকল আক্রান্ত হলে রক্তপূর্ণ বীর্যপাত হয় এবং ব্যথা হয়। (v) প্রোস্টেট আক্রান্ত হলে পায়ুর সম্মুখে ব্যথা হয় এবং মলত্যাগের সময় ব্যথা বেড়ে যায় । (vi) সাধারণত জ্বর জ্বর ভাব থাকে। (vit) দীর্ঘদিন সংক্রমণের কারণে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ, ত্বকে ক্ষত, মস্তিষ্কে প্রদাহ, হৃংপিণ্ডের ক্ষত হতে পারে।


👉 নারীতে গনোরিয়ার লক্ষণ: 

পুরুষের চেয়ে মহিলা এই রোগে কম আক্রান্ত হয় । 

1. সংক্রমনের কারণে যোনির ওষ্ঠে লাল ও দগদগে ঘা হয় ।

2. যোনি পথে অস্বাভাবিক সাদা ও হলুদ বর্ণের স্রাব নিঃসৃত হয়।

3. প্রস্রাবের যন্ত্রনা, প্রসবের তীব্র আকাঙ্ক্ষা , ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। 

4. ডিম্বনালি আক্রান্ত হলে এটি পুঁজ দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে যায়, ফলে সন্তান ধারণ ক্ষমতা হাস পায় ।

5. তলপেটে ব্যথা হয়।

6. মাসিক অনিয়মিত হয় ও তীত্র ব্যথা হয়। 

7. দীর্ঘদিন সংক্রমণের কারণে অস্থিসিন্ধতে প্রদাহ, তুকে ক্ষত, মস্তিকে প্রদাহ, হৎপিণ্ডে ক্ষত হতে পারে।

8. পায়ুপথে সংক্রমিত হলে পায়ুপথে তীব্র প্রদাহ ও রক্ত ক্ষরণ হতে পারে। মায়ের এরোগ থাকলে শিশু অপথালমিয়া নিওন্যাটারাম নামক চোখের প্রদাহ নিয়ে জন্ম নিতে পারে। 


ডাক্তারের পরামর্শ নিন


প্রতিকার (Remedy):

সামান্য সতর্কর্তা ও পারিপারশ্বিক অবস্থা সম্বন্ধে জ্ঞান রাখলে গনোরিয়ার মতো মারাত্মক যৌনবাহিত রােগ থেকে

নিজেকে ও ভবিষ্যৎ বংশধরকে নিরাপত্তা দেয়া খুব সহজ। এ জন্যে যা করা দরকার তা হচ্ছে : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে

দিয়ে কম বয়সী ও গর্ভবতী নারীদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে হবে । যৌনসঙ্গী নির্বাচনে অবশ্যই সর্তক ও নিশ্চিত

থাকতে হবে । চিকিৎসকর প্রেসক্রিপসন অনুযায়ী ওষুধ খেতে বা লাগাতে হবে । নিরোেগ না হওয়া পর্যন্ত মিলনে প্রবৃত্ত না

হওয়া। প্রতিবার মিলনকালে কনডম ব্যবহার করা ইত্যাদি ।



Post a Comment

0 Comments